Home ইসলাম ও জীবন ঈমান ও আমল

ঈমান ও আমল

0
al quran

আসসালামু আলাইকুম, উড্ডয়নে আপনাকে স্বাগতম!
কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন।

আজ আমরা কথা বলবো ইমান আমল সম্পর্কে।

ঈমান কাকে বলে? ঈমানের হ্রাস বৃদ্ধি কী? কীভাবে ঈমান বৃদ্ধি করা যায়?
ইসলাম হচ্ছে একমাত্র ঐশ্বরিক ধর্ম। যা আল্লাহ তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। ইসলাম মানতে হলে একজন মানুষের ঈমান আনা জরুরী। আর ঈমান কাকে বলে, এটা জানতে হলে আগে জানতে হবে ইসলাম কী? তা তাই আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করব ঈমান কাকে বলে? ঈমান ও ইসলামের সম্পর্ক কী? ঈমানের হ্রাস বৃদ্ধি কী? কীভাবে ঈমান বৃদ্ধি করা যায় ইত্যাদি।

ইসলাম কাকে বলে?
ইসলাম শব্দটি মূলত “সিলমুন” ধাতু থেকে এসেছে। যার অর্থ দাঁড়ায় আনুগত্য করা কিংবা আত্মসমর্পণ করা। তাই সহজভাবে ইসলাম শব্দের অর্থ দাঁড়ায় আনুগত্য করা, বশ্যতা স্বীকার করা, বিনয়ী হওয়া, নিজেকে সমর্পণ করা, আদেশ নিষেধ মেনে চলা, আত্মসমর্পণ করা, কোনো আপত্তি ছাড়াই যেকোনো হুকুম মেনে নেওয়া ইত্যাদি।

মোটকথা ইসলাম হলো একজন মানুষ আল্লাহর সমস্ত আদেশ নিষেধ মেনে নিয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত বন্দেগী করে তাঁর কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া। অর্থাৎ একজন মানুষ যখন নিজেকে ইসলামে অর্পণ করবে তখন সে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আদিষ্ট পথে চলবে ও নিষিদ্ধ পথ এড়িয়ে গিয়ে দুনিয়াবী জীবনযাপন করবে। আর যখন কোনো ব্যক্তি এইসব শর্ত মেনে এই পথে চলবে তখন তাকে বলা হবে মুসলিম।

ঈমান কাকে বলে?
ঈমান অর্থ হলো বিশ্বাস। অন্যদিকে আল্লাহর পরিপূর্ণ বিধানে আনুগত্য করা হলো ইসলাম। আর এই পরিপূর্ণ সকল বিধানকে মুখ দিয়ে স্বীকৃতি, অন্তর দিয়ে বিশ্বাস এবং কাজে পরিপূর্ণতা দান করাই হচ্ছে ঈমান। সহজ কথায় বলতে গেলে ইসলামের যাবতীয় বিধিনিষেধ ও বিধিবিধানকে মুখে স্বীকার করে, অন্তরে বিশ্বাস করে এবং সেইমতে কাজ করে তার প্রমাণ দেওয়াই হচ্ছে ঈমান। অনুরূপভাবে যে এই কাজ অর্থাৎ ঈমান এনে ইসলামের প্রতি আনুগত্যশীল হয় তাকে বলা হয় মুসলিম।

ঈমানের বিষয়বস্তু কীঃ
আমরা এতক্ষণ জানলাম ঈমান অর্থ হলো বিশ্বাস। এখন জানব কীসের উপর বিশ্বাস রাখাকে ঈমান বলা হয়। অর্থাৎ ঈমানের বিষয়বস্তু কী। আমরা পবিত্র কুরআন থেকে জানতে পারি ঈমানের মৌলিক বিষয় হলো সাতটি। যা একজন মুসলমানের বিশ্বাস করা অতীব জরুরী। এইসব বিশ্বাস ব্যতিরেকে কখনোই একজন মানুষ কিংবা মুসলমান কখনোই ঈমানদার হতে পারে না। আর তা হলো,
● সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা হিসাবে একমাত্র আল্লাহ কে বিশ্বাস করা।
● আল্লাহর সৃষ্ট ফেরেশতা সমূহের উপর বিশ্বাস করা।
● অতীত ও বর্তমানে প্রেরিত সকল আল্লাহর কিতাব সমূহের উপর বিশ্বাস রাখা।
● পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আসা আল্লাহর প্রেরিত সকল নবী রাসুলদের উপর বিশ্বাস রাখা।
● এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর পরে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে সবকিছুই ধ্বংস হবে এই বিশ্বাস রাখা।
● তাকদিরে বিশ্বাস রাখা। তাকদির হলো মানুষের ভাগ্য। যা মানুষ কখনোই জানতে পারে না, তার ভাগ্যে কী আছে। কিন্তু প্রতিটি মানুষের ভাগ্য আল্লাহ আগে থেকেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন। মানুষ সেই মতেই নিজের জ্ঞান গরিমা দিয়ে চলছে এই বিশ্বাস রাখা।
● ইহকালের পরে পরকালে বিশ্বাস রাখা। অর্থাৎ যখনই পৃথিবীর সময় শেষ হয়ে যাবে আল্লাহ এই পৃথিবী ধ্বংস করে দিবেন। এবং এই পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার পর আরেকটি জীবন শুরু হবে। যাকে বলা হয় পরকাল। যেখানে পৃথিবীতে আসা সকল মানুষের পৃথিবীর জীবনযাপনের উপর হিসাব নেওয়া হবে এবং সেইমতো বিচার করা হবে।
উপরোক্ত এই সাতটি বিষয়ের উপর বিশ্বাস রাখার নামকেই বলা হয় ঈমান।

ঈমানের ব্যাখ্যাঃ
আমরা যদি ঈমানকে একটি গাছের সাথে তুলনা করি। তাহলে দেখতে পাব যে, একটি গাছের তিনটি অংশ রয়েছে। একটি অংশ হলো শেখড়, একটি হলো মূল বৃক্ষ আর আরেকটি অংশ হলো তার অসংখ্য শাখাপ্রশখা, ফুল-ফলে ইত্যাদি।

গাছের এই তিনটি ভাগের মতো ঈমানেরও একটি অংশ হলো অন্তরের বিশ্বাস। যা মাটির নীচে মূলের মতো। এই মূল কিন্তু কেউ দেখে না। দ্বিতীয় অংশ হলো মুখের স্বীকৃতি। যা গাছের মূল কান্ডের মতো। যেটা আমরা সবাই বাইরে থেকে দেখি। এবং তৃতীয় অংশ হলো ঐ গানের শাখা প্রশাখা, ফুল ফল পত্র পল্লব ইত্যাদি। যা একটি গাছকে পরিপূর্ণ / স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সৌন্দর্যমণ্ডিত দেখায়। আর এই ফুল ফল হচ্ছে একজন মানুষের আমল। যা পৃথিবীর মানুষেরা দেখে তার সম্পর্কে সুন্দর ধারণা করে। যে আমল তাকে একজন পরিপূর্ণ মুমিনের পরিচয় দেয়।

সুতরাং একজন মানুষ যখন আল্লাহ্, মালাইকা বা ফিরিশতা, নবী রাসুল, সমস্ত আসমানী কিতাব, তকদীর, এবং মৃত্যুর পর উত্থান ও কিয়ামত ইত্যাদির উপর সামগ্রিক বিশ্বাস রাখে তখন তা গাছের শেখড়ের মতো। এরপর যখন সে নিজেকে একজন মুমিন মুসলিম হিসাবে স্বীকৃতি দেয়, তখন তা একটি গাছের মূল কান্ডের মতো। যা দেখে মানুষ বুঝতে পারে এই ব্যক্তি একজন মুসলিম।

এরপর যখন ঐ ব্যক্তি ইসলামের সকল বিধি-বিধান মেনে সেইমতো আমল করে। তখন তাকে দেখে সবাই বুঝতে পারে এই ব্যক্তি একজন পরিপূর্ণ মুমিন মুসলিম। যা আমরা একটি সুন্দর সুসজ্জিত গাছকে দেখ বুঝতে পারি।

অতএব ঈমানের বিষয়টি তিনটি গভীর বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত। যার একটির অবর্তমানে কখনোই একজন মানুষ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারে না।

কালেমা হচ্ছে ঈমানের মূলঃ
ঈমানের মূল ভিত্তি হলো “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এই কালেমাটি। যারা এই কালেমাকে পরিপূর্ণভাবে বুঝে শুনে বিশ্বাস করে এবং আমল করে তবেই সে পরিপূর্ণ ঈমানদার তথা ঈমানের মালিক হতে পারে। অতএব ঈমান হলো ইসলামের সকল সব স্তম্ভ বিশ্বাসের সাথে সাথে আল্লাহর দেয়া পরিপূর্ণ বিধানের উপর আমল করা।

কালেমাতে আল্লাহকে একক ও অদ্বিতীয় হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর জাত, সিফাত এবং ইবাদতে কারো অংশীদার গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থাৎ আল্লাহ্‌র সাথে অন্য কাউকে কোনো কিছুতেই শরীক করা যাবে না। এটাই হচ্ছে মূল ঈমান। যা আমাদের অধিকাংশ মুসলমানই জানি না এবং বুঝি না। শুধু মুখে ও অন্তরে কালেমা স্বীকার করে সালাত (নামাজ) সিয়াম (রোজা) হজ্জ্ব যাকাত পালন করলেই ঈমানদার হওয়া যায় না।

বরং আল্লাহকে এবং তাঁর বিধি বিধানের উপর এমনভাবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, তিনি ছাড়া দুনিয়ায় আর কেউ তাঁর মতো নয়। অর্থাৎ তিনি যা পারেন তা কেউ পারেন না। এবং তাঁর বিধি বিধান ছাড়া আর কোনো বিধানের কাছে মাথা নত করা যাবে না। তিঁনি যে ইবাদতের যোগ্য এবং প্রাপ্য তা আর কেউ পেতে পারে না। এটাই হচ্ছে ঈমানের মূল বিষয়।

আল্লাহকে বিশ্বাসের পাশাপাশি, কালেমাতে আরেকটি বিষয় রয়েছে। সেটা হচ্ছে, “মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”। এর অর্থ হলো ঈমান এনে একমাত্র রাসুলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ এবং অনুকরণেই ইসলাম পালন করতে হবে। তাঁর দেখানো ও শেখানো এবং অনুমতি ছাড়া অন্য যেকোনো ইবাদত আমল কখনোই আল্লাহর কাছে গ্রহনযোগ্য হবে না। সুতরাং আল্লাহর যাবতীয় বিধিবিধানের উপর বিশ্বাস রেখে তাঁর রাসুলের মতাদর্শ পথে চলাই হচ্ছে ঈমান।

এছাড়াও ঈমান হচ্ছে অবিচল বিশ্বাসের একটি নাম। ওহীর মাধ্যমে তথা কুরআন এবং হাদিসের মাধ্যমে জানা সকল সত্যকে সত্য বলে বিশ্বাস করা। যেকোনো ধরনের বিষয় কিংবা বিধি বিধিন ও নিষেধ শুধুমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের কারণে মেনে নেওয়া। সর্বাবস্থায় সত্যের পক্ষে সাক্ষ্যদান করা এবং আরকানে ইসলাম পালন করা। একইভা‌বে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামের মধ্যে দাখিল করে শরিয়ত ও উসওয়ায়ে হাসানাকে গ্রহণ করা।

ইসলামের যাবতীয় বিধিবিধানের প্রতি আস্থা, ভালোবাসা ও ভক্তি-শ্রদ্ধা রাখা, পরিপূর্ণ তাওহীদ অন্তরে ধারণ করা এবং শিরক বর্জিত আল্লাহকে পরিপূর্ণ বিশ্বাস করার নামই হলো ঈমান। ঈমান যে শুধু গ্রহণ করা তা কিংবা শুধু বিশ্বাস করা তা নয়। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বর্জনও বটে। সত্যকে গ্রহণকরে বাতিলকে বর্জন করা। বিদ্রূপ ও অবজ্ঞা ইত্যাদি মেনে নিয়ে কুফরকে ঘৃণা এবং এর পরিনামকে ভয় করা ইত্যাদি।

ঈমানের মূল স্বীকৃতি আমলঃ
একজন মানুষ যখন কালেমা পড়ে নিজেকে ঈমানদার ঘোষণা দিবে। তখন তার ঈমানের সম্পূর্ণ বহিঃপ্রকাশ পরিলক্ষিত হবে তার আমলের মাধ্যমে। একটি গাছ যেমন তার শাখাপ্রশখা পত্র-পল্লব ছাড়া শুধু মূল ও কান্ড দ্বারা পরিপূর্ণ হয় না এবং সুন্দর ও সুসজ্জিত লাগে না। ঠিক তেমনি একজন ঈমানদার আমল ছাড়া শুধু মুখে স্বীকৃতি এবং অন্তরে বিশ্বাস দিয়ে ঈমানদার দাবি করতে পারে না।

এর কারণ হচ্ছে, যারা মুনাফিক তারা তাদের ঈমান অন্তরে আছে বলে দাবি করলেও তারা আমলের ক্ষেত্রে গাফিলতি করে। শুধু তাইনয় মুনাফিকরা অন্তরে আল্লাহর বিশ্বাস রাখে মুখে স্বীকৃতিও দেয় আবার ইসলাম বিরোধী আমল এবং ইসলামকে অবজ্ঞাও করে। এই কারণে মুনাফিক যারা তারা কোনো প্রকার আমলের ধার ধারে না। তারা মানুষকে দেখায় আল্লাহকে স্বীকার করে কিন্তু আল্লাহর বিধান অনুযায়ী চলে না বা আমল করে না।

এই হিসাবে বর্তমান পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলমান আল্লাহকে স্বীকার করে। এবং তারা জানে সালাত তথা নামাজ আদায় করতে হবে। কিন্তু কখনো সালাত তথা নামাজ আদায় করে না। তাহলে তারা কীভাবে পরিপূর্ণ ঈমানদার থাকলো? কেননা রাসুলের স্বীকৃতি হচ্ছে ঈমান ও কুফুরির পার্থক্য হলো সালাত তথা নামাজ। সুতরাং তাদের ঈমান কখনোই পরিপূর্ণ নয়। প্রকৃত ঈমাদার হলো তারা যারা মহান আল্লাহকে পরিপূর্ণভাবে মন থেকে মানে ও বিশ্বাস করে এবং সেইমতো আমল করে।

ঈমানের হ্রাস বৃদ্ধিঃ
আমাদের উপমহাদেশে অধিকাংশ জন্মগত মুসলমান মনে করে এবং বিশ্বাস করে যে, ঈমান যেহেতু আছে সেহেতু আমরা মৃত্যুুর আগপর্যন্ত ঈমানদারই থাকবো। এরা এও বলে যে, নামাজ কালাম রোজা হজ্জ্ব না করি তো কী হয়েছে? আমাদের ঈমান তো ঠিক আছে। অর্থাৎ তারা মনে করে যে, মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহণ করলেই তারা পরিপূর্ণ ঈমানদারের মুসলিম।

কিন্তু ঈমান সম্পর্কে আমরা এতক্ষণ যা জেনেছি তাতে এটা স্পষ্ট যে, ঈমান কখনোই জন্মগত বিষয় নয়। ঈমান বিশ্বাসের পাশাপাশি আমলেরও বিষয়। একইসাথে পবিত্র কুরআন হাদিসের আলোকে আমরা জানতে পারি যে, ঈমানের হ্রাস বৃদ্ধিও ঘটে। অর্থাৎ এমন কাজ আছে, যা করলে ঈমান আরও বৃদ্ধি পায়। আবার এমন কাজ আছে যা করলে ঈমান কমে যায় কিংবা নষ্ট অথবা ঈমান ভঙ্গ হয়ে যায়।

আল্লাহ সুরা আনফালের ২ নং আয়াতে বলেন যে, যারা প্রকৃত ঈমানদার হবে, তাদের অবস্থা এমন, যখন কেউ তাদের সামনে আল্লাহর নাম নেয়, তখন তারা সাথে সাথে ভীত হয়ে পড়ে। একইভাবে যখন তাদের সামনে আল্লাহর কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। এবং তাঁর আয়াত শুনে শুনে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও ভরসা বেড়ে যায়।

উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ বলেন, যখন কোনো ঈমানদারদের সামনে আল্লাহর কিতাব তথা কুরআন পড়া হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। কিন্তু কেন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়? তার কারণ আল্লাহর কুরআন হচ্ছে তার বাণী। এখানে তিনি ইহকাল পরকালসহ মানুষের জন্য যাবতীয় বিধি নিষেধ প্রেরণ করেছেন।

তাই যখন কেউ কুরআন শুনে এবং বুঝে তখন সে বুঝতে পারে আল্লাহ কুরআনের এই আয়াত দ্বারা কী বুঝিয়েছেন। এরফলে তার আল্লাহর প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা ভয় ভীতি ইত্যাদি চলে আসে। এভাবে যখন কেউ ঈমান আমল ইহকাল পরকালের কথা শোনে তখন তাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি প্রশান্তি এবং ভয় এসে আমলের ইচ্ছা জাগ্রত হয়।

কিন্তু আবার যখন দুনিয়ার বিভিন্ন কাজে জড়িত হয়ে ব্যস্ত হয়ে যায় তখন সেই ঈমান আমলের ইচ্ছায় ভাটা পরে যায়। আর এভাবেই মানবিক কারণেই মানুষের মধ্যে নানান ভাবে ঈমানের এই হ্রাস বৃদ্ধি চলতেই থাকে।

যে কারণে ঈমান কমে যায়ঃ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনে আমরা এমন এমন সব কাজ করি যা দ্বারা প্রতিনিয়তই আমাদের ঈমান দিন দিন কমে যায়। আমরা এখন দেখব মৌলিক কী কারণে মানুষের ঈমান কমে যায় বা যেতে পারে।

ক) আল্লাহর রয়েছে অসংখ্য গুণাবলী। যে গুণাবলী দ্বারা তিনি মানুষকে শাস্তি দিয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা যখন এইসব গুণাবলী নিয়ে চিন্তা করি না তখন আমাদের ঈমান কমে যায়। আমরা এই দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত শত শত হাজার হাজার পাপ করছি। অথচ এই সব পাপের কারণে আল্লাহ আমাদের পাকড়াও না করে ছেড়ে দিচ্ছেন।
এই ছাড় পাওয়ার কারণে অধিকাংশ পাপী আরও পাপ করতে উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে। অথচ আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। এই ছাড় পেয়ে পাপী মানুষেরা মনে করছে আল্লাহ মানুষকে শাস্তি দেন না। বা তাঁর শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা নেই (নাউজুবিল্লাহ) এই জাতীয় উদাসীনতা আমাদের ঈমানকে দিন দিন কমিয়ে দেয়।

খ) পৃথিবীর মানুষের জন্য আল্লাহর নানান বিধি বিধান। যে বিধি বিধানে আল্লাহ পাপীদের শাস্তির ব্যাপারে কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা যখন শাস্তি সম্পর্কে কোনো চিন্তা ভাবনা বা গবেষণা করব না। তখন আমাদের ঈমান কমে যেতে পারে। যেমন আমরা অনেকেই জানি না আমাদের কী কী পাপের জন্য কী কী শাস্তি আল্লাহ আমাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন।
আল্লাহ আমাদের জন্য কী কী বিধান নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহর কী কী বিধান আমাদের মেনে চলা উচিত ইত্যাদি। একইসাথে আল্লাহর কী কী অবাধ্যতার কারণে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কী কী ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে ইত্যাদি। এইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমরা কখনোই চিন্তা ভাবনা করি না বলেই আমাদের ঈামন দিনদিন কমে যায়। আর ঈমান কমে গেলে আমরা আমল বন্ধ করে দেই।

গ) বর্তমান দুনিয়ায় মানুষ ভালো থাকা একপ্রকার দায় হয়ে গেছে। ফলে চারদিকে মানুষের পাপের ছড়াছড়ি। ব্যাপক হারে পাপ বেড়ে যাওয়ার কারণেও আমাদের ঈমান দিনদিন কমে যাচ্ছে। আমাদের অধিকাংশ মুসলমানই জেনে না জেনেও আল্লাহর বিধিবিধান তোয়াক্কা করে না। ফলে তারা প্রতিনিয়ত যে পাপ গুলো করে, সেইসব পাপের কারণেও তাদের ঈমান দিন দিন কমে যাচ্ছে।

উপরোক্ত মৌলিক কারণ ছাড়াও নিম্নোক্ত বিভিন্ন কারণে আমাদের ঈমান কমে যাচ্ছে।
● দিনদিন পৃথিবীতে ভালো মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, খারাপ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আমাদের আশেপাশে সব খারাপ মানুষের আনাগোনা। একারণে আমরা যদি খারাপ মানুষের সাথে উঠাবসা করি তাহলে আমরাও ধীরে ধীরে খারাপ মানুষে পরিনত হব। তাই অসৎ মানুষের সঙ্গ সবসময়ই যেকোনো ঈমানদারের ঈমান কমিয়ে দেয়।
● ঈমান কমে যাওয়ার মূল কারণ হলো কুরআন জেনে না পড়া। আমরা অনেকেই কুরআনের আরবি তেলাওয়াত করি। কিন্তু কুরআনের তেলাওাতে কী আছে, আল্লাহ কুরআনে কী আদেশ নির্দেশ দিয়েছেন, তার কিছুই জানি না। যারফলে কুরআন না জানার কারণে আমরা ঈমান আকিদা ইত্যাদি সম্পর্কে অজ্ঞ থাকি। এই অজ্ঞতার কারণে আমাদের ঈমান বৃদ্ধি না হয়ে বরং কমে যায়।
● নিয়মিত সালাত তথা নামাজ আদায় না করার কারণেও আমাদের ঈমান কমে যায়। কেননা যে ব্যক্তি নিয়মিত সালাত আদায় করে সে সর্বদা আল্লাহর সোহবতে থাকে। আর যে নিয়মিত সালাত আদায় করে সে যাবতীয় পাপ থেকে দূরে থাকে। তাকে সহজে শয়তান কাবু করতে পারে না। তাই নামাজ না পড়ার কারণে আমাদের ঈমান কমে যায়।
● ইসলাম এবং ইসলামী ইতিহাস নবী রাসুল, সাহাবায়ে কেরামসহ ভালো ভালো অলি আউলিয়াদের সম্পর্কে না জানা এবং না পড়ার কারণেও মানুষের ঈমান কমে যায়। কেননা আল্লাহ বলেন, মানুষ যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আনো…।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৩) অর্থাৎ সাহাবী ও সালফে সালেহীনরা যেভাবে ঈমান আকিদা পোষণ করেছে আমাদেরও সেইভাবে ঈমান আকিদা আমল করতে হবে। আর তাই তাদের সম্পর্কে না জানলে আমাদের ঈমান বৃদ্ধি না পেয়ে বরং কমে যাবে।
● আল্লাহর নামে আল্লাহর জিকির আজকার না করার কারণেও ঈমান কমে যেতে পারে। যারা সবসময়ই আল্লাহর স্বরণে থাকে না তাদের ঈমান দুর্বল হয়ে কমে যায়।
● দিনদিন আমরা ইসলামকে প্রাধান্য না দিয়ে দুনিয়াকে বেশী প্রাধান্য দিচ্ছি। যেকারণে আমাদের মন মানসিকতা দুনিয়ামুখী হওয়ার কারণে আমাদের ঈমান কমে যাচ্ছে।
● সবসময় বিলাসী মনোভাব এবং অহংকারের কারণেও মানুষের ঈমান কমে যেতে পারে। আমরা যারা দুনিয়ায় সুস্থ সবল আছি, যাদের আল্লাহ টাকাপয়সা দিয়েছে, তারা অন্যান্যদের, যারা দুস্থ অসহায় এবং বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্তদের কথা কখনোই চিন্তা করি না। আমরা ভুলে যায় তারাও একসময় সুস্থ সবল ছিলো। কিন্তু আল্লাহ তাদের আজ এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে।
কিন্তু আমরা আমাদের অর্থবিত্ত ও অহংকারের কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে সেই চিন্তা করি না। ফলে আমরা দ্বীন ভুলে দুনিয়া নিয়ে পড়ে থাকি। আর এরফলে দিনদিন আমাদের ঈমান দুর্বল হয়ে কমে যেতে থাকে।
● মানুষের ঈমান কমে যাওয়া সর্ববৃহৎ কারণ হলো অশ্লীলতা। আমাদের আধুনিক যুগে অতিমাত্রায় ডিজিটালাইজেশনের কারণে, আমাদের হাতে হাতে এখন অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। এইসব অশ্লীলতার কারণে আজ আমরা দ্বীন ধর্ম ভুলে গিয়ে এইসব নিয়েই পড়ে আছি। ফলে আমাদের ঈমানও দুর্বল হয়ে দিনদিন কমে যাচ্ছে।

এইসব কারণে আমাদের ঈমান কমে যাওয়ার ফলশ্রুতিতে আমাদের আমলের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। আর আমলের ঘাটতি মানেই ঈমানের কমতি। আর আমল ছাড়া ঈমান কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা যে আল্লাহর উপর ঈমান তথা বিশ্বাস করেছি যে, তিনি এমন স্বত্তা যিনি অসম্ভব পরাক্রমশালী এবং শাস্তি দিতে কুণ্ঠিত হন না। আর তাঁকে যে আমরা মানি এবং ভয় করি তার প্রমাণ হচ্ছে তাঁর যাবতীয় বিধি -বিধান মেনে চলে তাঁর ভালোবাসা তথা জান্নাতের জন্য আশা করা।

যেভাবে ঈমান বৃদ্ধি হয়ঃ
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে, ঈমানের হ্রাস বৃদ্ধি হয়। আর তাই আমাদের উচিত হবে ঈমান বৃদ্ধি করা। নিচে ঈমান বৃদ্ধির বিভিন্ন মৌলিক উপায় উপকরণ দেওয়া হলো।

ক) আল্লাহর অসীম নেয়ামত ও তার বিভিন্ন গুণাবলীগুলো নিয়ে বিষদ গবেষণা করা। আল্লাহর যাবতীয় গুণাবলী নিয়ে আমরা যদি চিন্তাভাবনা গবেষণা ইত্যাদি করি। তাহলে আমরা বুঝতে পারব আল্লাহ্ কত অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন। আর যখনই আমাদের এই ধারণা হবে যে, আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তাহলে অবশ্যই আমাদের ঈমান বৃদ্ধি পাবে। তাই আমাদের উচিত হবে আল্লাহ্‌র বিভিন্ন গুণ ক্ষমতা ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা। এই চিন্তাধারার ফলে আমাদের বিশ্বাস মজবুত হবে এবং ঈমান বৃদ্ধি পাবে।

খ) আল্লাহর নিদর্শন নিয়ে গবেষণা করা। আল্লাহর ক্ষমতা হলো তিনি পরাক্রমশালী এবং যেকোনো কাজে তিনি শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। আর আল্লাহর নিদর্শন হলো, তিনি কত নিখুঁত ও যত্নে এই বিশ্বের সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। আমাদের চারপাশে এমন এমন সব নিদর্শন রয়েছে যা আল্লাহর সৃষ্টিশীল প্রতিভার প্রতিচ্ছবি।

তাই আমরা যদি তাঁর আসমান, জমিন সাগর, মাহাসাগর, বন, পাহাড় ইত্যাদিসহ সৃষ্টি জগৎ ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা বা চিন্তা-ভাবনা করি, তাহলেও আমাদের ঈমান বাড়বে। এইসব গবেষণা করলে আল্লাহ্কে আরও জানতে তথা ইসলাকে জানতে আগ্রহ সৃষ্টি হবে। সেই আগ্রহ আমাদের ঈমান বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

পৃথিবীর অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলামে আসা অধিকাংশ মানুষই তাঁর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা কারণেই ঈমান এনে মুসলিম হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপ আমেরিকার মানুষ যখন মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করে, তারা বিভিন্ন গবেষণা করে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়ার পরই ইসলাম গ্রহণ করেছে। তাই আল্লাহর সৃষ্টি জগৎ নিয়ে গবেষণা করলেও আমাদের ঈমান বৃদ্ধি পাবে।

গ) আমাদের ঈমান বৃদ্ধির সবচেয়ে পরীক্ষিত কাজ হলো সৎ আমল করা। আল্লাহকে ভয় তথা তাঁর আদেশ নিষেধ না মানলে পরকালের শাস্তির মুখোমুখি হওয়া। এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় তথা ঈমান আমল পালনের পর জান্নাতে যাওয়ার আশায় বেশী বেশী নেক আমল করলে ঈমান বৃদ্ধি পায়। যার ভিতরে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সৎ আমল বা ভালো কাজ করার প্রবণতা থাকবে, নিঃসন্দেহে তার ঈমান অন্যদের চেয়ে বেশী হবে।

উপরোক্ত বিষয় ছাড়াও ঈমান বৃদ্ধির জন্য আমাদের যা আমল করা উচিতঃ
● “সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ” তাই আমাদের ঈমান আমল বৃদ্ধির জন্য ভালো আবেদী মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। কেননা কুরআনের সুরা তাওবাতে সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকার জন্য বলা হয়েছে।
● সবচেয়ে বেশী বেশী যে কাজটি করা প্রয়োজন তা হল, কুরআন বুঝে পড়া। কেননা কুরআন মানুষের ঈমান বৃদ্ধি করে।
● নিয়মিত সালাত তথা নামাজ আদায় আদায় করা। কেননা সালাত মানুষকে যাবতীয় পাপ থেকে দূরে রাখে। আর পাপ মানুষের ঈমানকে দুর্বল করে ।
● নবী রাসুল, সাহাবায়ে কেরামসহ ভালো ভালো অলি আউলিয়াদের জীবনী পড়তে হবে। তাহলে আমাদের ঈমান বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ্ বলেন, মানুষ যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আনো…। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৩)
● বেশী বেশী করে আল্লাহর জিকির আজকার করতে হবে। কেননা দুর্বল ঈমানের বৃদ্ধির জন্য জিকির খুবই দরকারী। আর আল্লাহর জিকির যেকোনো মানুষের অন্তরে ঈমানের বীজ রোপণ করে। আল্লাহ সুরা রাদে বলেন, ‘যারা ঈমানদার এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে।
● দুনিয়ার যাবতীয় বিষয়ের চেয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে প্রাধান্য দিতে হবে। কেননা রাসুলের আদর্শের অনুসরণ এবং অনুকরণই হচ্ছে ইসলাম।
● সবসময় আখিরাতের চিন্তা করতে হবে। কেননা এই দুনিয়া সামান্য দুদিনের। আখিরাতই আমাদের আসল ঠিকানা।
● সবসময় দুস্থ অসহায় ও রোগীদের কথা চিন্তা করতে হবে। তাদের তুলনায় আল্লাহ আমাদের কত ভালো রেখেছেন সেই চিন্তা করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে।
● অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকা। ঈমান বৃদ্ধির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকা। কেননা অশ্লীলতা আমাদের ঈমান আমলকে দুর্বল করে দেয়।

উপরের আলোচনা পর্যবেক্ষণ করে আমরা এটা সুস্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারলাম যে, ঈমান কখনোই শুধু-মাত্র একটি স্বীকৃতির বিষয় নয়। কেননা যদি শুধু স্বীকৃতির বিষয়ই হতো তাহলে সকল নামধারী মুসলিম এবং মুনাফিকরাও ঈমাদদার বলে গণ্য হবে। অথচ মুনাফিকরা ঈমানদার নয়। এবং তারা জাহান্নামে যাবে এটা সুরা নিসার ১৪৫ নং আয়াতে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, “নিঃসন্দেহে মুনাফেকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে।”

সুতরাং মুনাফিক হলে ঈমানদার নয়। অর্থাৎ শুধু মুখে ঈমান আনলেই মুমিন হওয়া যাবে না। যতক্ষণ না তা কাজে কর্মে তার আমল দ্বারা প্রমাণিত না হবে। কেননা আল্লাহ্ সুরা ইউসূফের ১০৬ নং আয়াতে বলেন, “অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরক ও করে। “

অর্থাৎ অধিকাংশ মানুষ যারা জন্মগত মুসলমান কিংবা অন্য ধর্ম থেকেও পরিবর্তিত হয়ে আল্লাহ্‌র উপর বিশ্বাস রেখে ঈমান আনে। আবার আল্লাহকে বিশ্বাস করার পাশাপাশি শিরক করে। আর এই শিরক করার কারণে তার ঈমান নষ্ট ও ধ্বংস হয়ে যায়। সে আর মুসলিম থাকে না। আল্লাহও তাকে কখনোই ক্ষমা করবে না।

আল্লাহ্ সূরাঃ আন নিসার ৪৮ নং আয়াতে বলেন, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে শরীক করে।” অতএব আল্লাহর কাছে জান্নাত ও তাঁর সন্তুষ্টি পেতে হলে আমাদের কালেমার প্রকৃত অর্থ এবং ব্যাখ্যা (তাওহীদ, শিরক, বিদআত ইত্যাদি) সবকিছু জেনে পরিপূর্ণভাবে বুঝে বিশ্বাস করে এবং সেই অনুযায়ী আমল করেই ঈমানদার হওয়া লাগবে।

আজ এই পর্যন্তই, ইনশা আল্লাহ অন্য কোনো টপিক নিয়ে কথা হবে। ভুল হলে অথবা আপনার কোনো মতামত থাকলে আমাদের পেইজে ইনবক্স এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন।

error: Content is protected !!
Exit mobile version