সোমবার, মে ২০, ২০২৪

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

আসসালামু আলাইকুম, উড্ডয়নে আপনাকে স্বাগতম!
কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন।

আগের পোষ্টে আমরা জেনেছি ডোমেইন এবং ওয়েবহোস্টিং নিয়ে, আজ আমরা আলোচনা করবো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে। একটি ডোমেইনের সাথে হোস্টিং লিংক করার পরে সাইটের ডিজাইন করতে হয়, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট মানেই হচ্ছে সাইটের ডিজাইন বা ডেভেলপ। ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমেই সাইট সাজানো হয়ে থাকে।

প্রথমে আমরা আলোচনা করবো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আসলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি?

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ওয়েবসাইটের জন্য একটি এপ্লিকেশন তৈরী করা, যেমন সিস্টেম লগিন, নিউজ লেটার সাইন আপ, উইজেট, ফাইল আপলোড করে সেই ফাইল ডেটাবেসে সেভ করা।
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করে থাকেন তাহলে ক্লাইন্টের চাহিদা অনুযায়ী কিছু এপ্লিকেশন তৈরী করা লাগতে পারে যা এখনো কেউ তৈরী করেনি। এই বিষয়টি বেশি চ্যালেঞ্জিং এবং ডাইনামিক।
অর্থ্যাৎ আপনাকে এক বা একাধিক এপ্লিকেশন ডিজাইন করতে হবে।
এখানে আমরা ওয়েব ডেভেলপমেন্টকে আরও সুনির্দিষ্ট ভাবে বলতে পারি ওয়েব এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট।

web hosting

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে যেসব জানতে হবে এইচটিএমএল, সিএসএস এবং কিছু প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ যেমনঃ

১. জাভাস্ক্রিপ্ট (JAVA Script): এটিকে ব্রাউজার স্ক্রিপ্টিংও বলা হয় মানে হচ্ছে, এই ল্যাংগুয়েজ শুধুমাত্র ব্রাউজারে (ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, ফায়ারফক্স, অপেরা, গুগল ক্রোম ইত্যাদি) কাজ করবে।
কিছু ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে জাভাস্ক্রিপ্ট এর কাজ দ্রুত করা যায়। এরুপ একটি ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে জেকোয়েরি।
জানতে হবে কারন এখন যেকোন ডাইনামিক সাইটের ডেটাবেস আছে অথবা বলতে পারেন ডেটাবেস থাকতেই হয়

২. সার্ভার (Server) সাইড প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ যেমনঃ পিএইচপি (PHP) এটিকে সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং বলা হয় কেননা এই ল্যাংগুয়েজ দিয়ে লেখা কোডগুলি শুধুমাত্র ওয়েব সার্ভারে এক্সিকিউট করা হয়।

৩. ডেটাবেস (Database): মূলত পিএইচপি স্ক্রিপ্ট / সিএমএস / ডাইনামিক ওয়েবসাইটে ডেটাবেস স্থাপন বা সংযোগ করতে হয়, মাই-এসকিউয়েল / পোস্টগ্রে-এসকিউয়েল দিয়ে ডেটাবেস বানানো হয় অর্থ্যাৎ আপনি যদি ডাইনামিক ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডেটাবেস ডিজাইন শিখতে হবে।

৪. পিএইচপি (PHP): আপনাকে যেকোনো একটি পিএইচপি ফ্রেমওয়ার্ক শিখতে হবে যেমন কোডইগনাইটার। এছাড়াও অন্যান্য অনেক ফ্রেমওয়ার্ক আছে যেমন: কেক পিএইচপি, জেন্ড ফ্রেমওয়ার্ক, সিমফনি, ওয়াই আইআই, কোহানা ইত্যাদি যেকোন একটি শিখলেই চলবে।
আপনি চাইলে ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়াও ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরী করতে পারবেন তবে তাতে অনেক বেশি সময় লাগবে এবং বেশি বেশি কোড লিখতে হবে, আর সবকিছুই জন্য অবশ্যই আপনার অনেক দক্ষতা লাগবে।

৫. এক্সএমএল (XML): ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরী করতে এক্সএমএল প্রয়োজন, তাই আপনাকে এক্সএমএল শিখতে হবে।

কিভাবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখবেন?

প্রথমেই আপনার মনস্থির করতে হবে এবং কমপক্ষে দুই বছর সময় ব্যয় করবেন শুধু ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য। তারপর ফেসবুকের odesk help গ্রুপে। গ্রুপে যোগ দেয়ার পর প্রথমেই গ্রুপে দেয়া ফাইলগুলো পড়ে ফেলেন। প্রথম প্রথম হয়তো কিছুই বুঝবেন না তারপরও ধৈর্য ধরে পড়তে থাকবেন। এরপর গ্রুপে সবার সকল পোষ্ট নিয়মিত পড়তে থাকেন।
তারপর ফেইসবুকের আরো অনেক গ্রুপ রয়েছে সেগুলোতে যোগ দিন। ইউটিউব ঘাটুন, গুগলিং করুন, প্রথমে এইচটিএমএল টিউটোরিয়াল দেখতে পারেন। এরপর সিএসএস এবং সাথে সাথে ফটোশপের টিউটোরিয়াল গুলো দেখুন। কোন তাড়াহুড়া করবেন না, ধীরে ধীরে শিখুন, কমপক্ষে তিন/চার মাস সময় দিয়ে এইচটিএমএল, সিএসএস এবং ফটোশপ শিখুন। মনে রাখবেন এটাই আপনার ভিত্তি, আপনি সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি শিখে ফেলতে চাইলে তেমনি করে খুব তাড়াতাড়ি ভুলেও যাবেন, তাই মন দিয়ে ধীরে ধীরে শিখুন।
কারণ ভিত্তি যত মজবুত হবে আপনার সামনের পথগুলো তত সহজ হবে।

প্রথমে ভালোমানের বাংলা টিউটোরিয়াল দেখুন, সেটি বুঝলে অবশ্যই ভাল মানের ইংরেজী টিউটোরিয়ালও দেখুন। বেশি বেশি গুগলিং করুন।

আপনি ওয়েব ডেভেলপার হতে চাইলে আপনার জন্য দুইটি রাস্তা রয়েছে।

১. যেকোন একটি সিএমএস (CMS) শিখুন, যেমন – ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা ইত্যাদি শেখা।
যদি সিএমএস শিখতে চান অবশ্যই আপনাকে জাভাস্ক্রীপ্ট, জেকুয়েরি, পিএইচপি সম্পর্কে বেসিক ধারনা রাখতে হবে।
এগুলো শেখা ছাড়াও আপনি সিএমএস শিখতে পারবেন তবে প্রফেশনালি কাজ করতে পারবেন না।
সিএমএস দিয়ে কাজ করতে চাইলে খুব ভালভাবে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিক্ষার প্রয়োজন নেই। তবে আপনাকে জানতে হবে কোন কোড কিভাবে কাজ করে। এটি হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর শর্টকাট।

২. সকল প্রকার প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখে নিজেকে একজন দক্ষ ওয়েব ডেভালপার হিসেবে গড়ে তোলা।
একজন দক্ষ ওয়েব ডেভালপার হতে হলে আপনাকে অবসসই জাভাস্ক্রীপ্ট, জেকুয়েরি, পিএইচপি, মাইএসকিউএল ইত্যাদি ল্যাংগুয়েজ খুব ভালভাবে শিখতে হবে, এক্ষেত্রে আপনার সময় বেশি লাগবে এবং সাথে লাগবে আপনার শ্রম। তবে আপনি যদি কষ্ট করতে পারেন তবে আপনার জন্য সুখবর হচ্ছে এই রকম ডেভালপারের চাহিদা বিশ্বজুড়ে অনেক বেশি। একটু কষ্ট করে সাথে ধর্য্য ধরে দুই তিন বছরে যদি শিখতে পারেন তখন দেখবেন কাজই আপনার পেছনে ঘুরছে, এবং আপনাকে কষ্ট করে কাজ খুঁজতে হবে না।

আশাকরি এই পোষ্টে আমি কি বুঝেতে চেয়েছি তার মোটামুটি ধারনা পেয়ে গেছেন।

এবার আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন আপনি কোন পথে যাবেন।

কোথায় শিখবেন?

বর্তমানে অনলাইনে লক্ষ্য লক্ষ্য টিউটোরিয়াল রয়েছে যা দিয়ে আপনি খুব সহজে ঘরে বসে একা একাই সবকিছু শিখতে পারবেন।

www.w3schools.com যেখানে আপনি সব ধরণের টিউটোরিয়াল পাবেন।

আর টুলস পেজে পাবেন সব রকম টুলস। আপনি চাইলে বিভিন্ন প্রকার ট্রেনিং সেন্টার থেকেও শিখতে পারেন। তবে একটা ব্যাপারে লক্ষ্য রাখবেন।

আমাদের দেশে এখন পযর্ন্ত ভাল মানের ট্রেনিং সেন্টার আছে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি।

লেখক পরিচিতিঃ

Faruk Hossain Mithu
Faruk Hossain Mithuhttps://mithu.kholifa.com
I'm Linux Admin, traveler with a passion for movies, tech and programming. Navigating the digital realm with expertise, I enjoy exploring diverse landscapes and staying at the forefront of technology trends. Code enthusiast and cinephile, blending a love for innovation with a sense of adventure.
- বিজ্ঞাপন -
সম্পর্কিত পোস্টগুলো
- বিজ্ঞাপন -

জনপ্রিয় পোস্টগুলো

- বিজ্ঞাপন -
error: Content is protected !!